প্রশ্নোত্তর

পুরুষদের সাথে মহিলাদের একই হলরূমে শিক্ষামূলক সেমিনারে উপস্থিত হওয়া

প্রবন্ধটি পড়া হলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।

শুরু করছি মহান আল্লাহর নামে যিনি পরম করুনাময়, অসীম দয়ালু।

প্রশ্ন: সেমিনার হলরূমে যেখানে শিক্ষামূলক সেমিনারের আয়োজন করা হয় সেখানে হলরূমের পেছনের অংশে পুরুষদের থেকে কোন আড়াল ছাড়া নারীদের বসানো কি জায়েয? উল্লেখ্য, আমরা যদি আড়াল দেই তাহলে মহিলারা অনুষ্ঠানমালা দেখতে পাবে না। নাকি নারীদেরকে আলাদা হলরূমে বসানো ফরজ; যেখানে বসে টিভি সম্প্রচারের মাধ্যমে তারা অনুষ্ঠানমালা দেখতে পারবে?

উত্তর:

আলহামদুলিল্লাহ।

যদি এ সেমিনার শরয়ি সেমিনার হয় কিংবা দরকারী শিক্ষামূলক সেমিনার হয় এবং নারীরা পরিপূর্ণ শরয়ি পর্দা পরিধান করে সেমিনারে আসে, নারী-পুরুষের মেশামেশি না থাকে, এগুলো ছাড়াও অন্য কোন শরিয়ত বিরোধী বিষয় না থাকে, পুরুষেরা সামনের সারিগুলোতে বসে, তাদের পিছনে কিছু জায়গা ফাঁকা রেখে মহিলারা হিজাব সহকারে বসে এবং সকলে মিলে কল্যাণকর কোন আলোচনা শুনে, নারী-পুরুষের মিশ্রণ না ঘটে, কিংবা মহিলারা উচ্চস্বর না করে তাহলে এতে কোন অসুবিধা নেই; যদিও পুরুষ ও নারীদের মাঝে কোন আড়াল না থাকে তবুও।

শাইখ বিন বায (রহঃ) কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল:

আমাদের একটি মসজিদ রয়েছে। মসজিদের একটি অংশকে দেয়াল দিয়ে পুরুষদের নামাযের জায়গা থেকে আলাদা করে মহিলাদের নামাযের জায়গা করা হয়েছে। মহিলারা ইমাম ও শিক্ষকের কথা শুনার জন্য মহিলাদের অংশে সাউন্ড বক্স দেয়া আছে। এক লোক এ দেয়ালটি ভেঙ্গে ফেলার উদ্যোগ নিয়েছেন। তার দলিল হচ্ছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিস, “প্রথমে পুরুষেরা কাতার করবে, তারপর শিশুরা কাতার করবে, তারপর মহিলারা কাতার করবে”। এ ইস্যু নিয়ে চরম মতানৈক্য সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে আপনাদের দিকনির্দেশনা কি?

জবাবে তিনি বলেন: এর কোনটিতে কোন অসুবিধা নেই। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যামানায় মহিলারা পুরুষের সাথে পুরুষের পেছনে নামায আদায় করত; সেখানে কোন দেয়াল, কিংবা অন্য কিছুর আড়াল ছিল না। মহিলারা পুরুষদের সাথে মসজিদের পেছনের অংশে নামায আদায় করত। সহিহ হাদিসে এসেছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “পুরুষদের সর্বোত্তম কাতার হচ্ছে- সামনের কাতার; আর সবচেয়ে অনুত্তম কাতার হচ্ছে- পেছনের কাতার। পক্ষান্তরে, নারীদের সর্বোত্তম কাতার হচ্ছে- পেছনের কাতার এবং সবচেয়ে অনুত্তম কাতার হচ্ছে- সামনের কাতার।” কারণ মহিলাদের সামনের কাতার পুরুষদের নিকটবর্তী। সুতরাং নারীরা যদি মসজিদের শেষ অংশে পুরুষদের পেছনে পর্দাসহ নামায আদায় করে তাতে কোন অসুবিধা। কোন দেয়াল বা অন্য কোন আড়ালের প্রয়োজন নেই।

আর যদি দেয়াল দেয়া হয়, কিংবা পর্দা টানানো হয় যাতে করে মহিলারা মুখ খুলে আরামের সাথে নামাযের স্থানে থাকতে পারে এবং মাইকের মাধ্যমে শুনতে পারে কিংবা মাইক ছাড়া ইমাম তাদেরকে শুনানোর ব্যবস্থা করেন তাতেও কোন অসুবিধা নেই। আলহামদুলিল্লাহ, এ বিষয়টি প্রশস্ত; একে সংকীর্ণ করার কিছু নেই। আর যদি রেলিং দেয়া হয় যাতে করে মহিলারা ইমাম ও মোক্তাদিদেরকে দেখতে পায়, তাদের কথা শুনতে পায় তাতেও কোন অসুবিধা নেই। বিষয়টি প্রশস্ত; সুতরাং এ বিষয়ে কড়াকড়ি আরোপ করার কিছু নেই। দেয়াল দেয়া হোক, কিংবা রেলিং দেয়া হোক, কিংবা পর্দা দেয়া হোক, কিংবা কোন কিছু না দেয়া হোক সবকিছু জায়েয; আলহামদু লিল্লাহ। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যামানায় কোন দেয়াল বা অন্য কিছুর আড়াল ছিল না; তারা মানুষের সাথে পুরুষদের পেছনে নামায আদায় করত।[নুরুন আলাদ দারব (১২/২৬৭-২৬৯) সমাপ্ত]

আল্লাহই ভাল জানেন।

ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব

মন্তব্য করুন

Loading Facebook Comments ...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button