ফিতনার সময় মু’মিনের করণীয়
প্রবন্ধটি পড়া হলে শেয়ার করতে ভুলবেনা
শুরু করছি মহান আল্লাহর নামে যিনি পরম করুনাময়, অতি দয়ালু।
ফিতনার সময় মু’মিনের করণীয়ঃ
উছমান (রাঃ ) এর হত্যা থেকেই উম্মাতে মুহাম্মাদীর ভিতরে ফিতনার সূচনা হয়েছে। কিয়ামতের পূর্বে তা আর বন্ধ হবেনা। আমাদের প্রিয় নবী (ছাঃ) ফিতনার সময় মু’মিনদের করণীয় সম্পর্কে সুস্পষ্ট বর্ণনা দিয়ে গেছেন। ফিতনার সময় যেহেতু যুদ্ধরত ও বিবাদমান দলগুলোর কোনটির দাবী সত্য তা নির্ণয় করা কঠিন হয়ে যায়। তাই তিনি এহেন জটিল পরিস্থিতে কোন দলের পক্ষে যোগদিয়ে যুদ্ধে নামতে নিষেধ করেছন। সে সময় যার ছাগলোর পাল থাকবে তাকে ছাগলের পাল নিয়ে পাহাড়ের চূড়ায় চলে যেতে বলেছেন কিংবা ইসলামী রাষ্ট্রের সীমান্তে প্রহরায় পৌঁছে গেলে আত্মরক্ষার উদ্দেশ্যে ও যুদ্ধে শরীক হতে নিষেধ করেছেন। কারণ এটাই হবে তার ঈমানের জন্যে নিরাপদ। নবী (ছাঃ) বলেনঃ
اءِنَّهَا سَتَقُو نُ فِتَنٌ أَلَ ثُمَّ تَكُو نُ فِتْنَةٌ الْقَا عِدُ فِهَا خَيْرٌ مِنَ الْمَاشِي فِهَا خَيْرٌ مِنَ السَّ عِي إِلَيْهَا أَل فَءِذَا نَزَلَتْ أَوْ وَقَعَتْ فَمَنْ كَنَلَهَ إِبِلٌ فَلْيَلْحَقْ بِاءِباِلِهِ وَمنْ كَنَتْ لَهُ غَنَمٌ فَلْيَلَحَقْ بِغَنَمِهِ وَمَنْ كَنَتْ لَهُ أَرْضٌ فَلْيَلْهَقْ بأَرْضِهِ قاَلَ فَقَالَ رَجُلٌ ياَ رَسُولَ الّلهِ أَرَأَيْتَ مَنْ لَمْ يَكُنْ لَهُ إِبِلٌ وَلَا غَنَمٌ وَلَا أَرْضٌ قَلَ يَعْمِدُ إِلَى سَيْفِهِ فَيَدُقُّ علَى حَلَى حَدَّهِ بِحَجَرٍ ثُمَّ لِيَنْجُ إِنِ اسْتَطاَ عَ النَّجاَ ءَ اللّهُمَّ هَلْ بَلَّغْتُ اللَّهُمَّ هَلْ بَلَّغْتُ اللَّهُمَّ هَلْ بَلَّغْتُ قَلَ فَقاَلَ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَرَأَيْتَ إِنْ أُكْرِ هْتُ حَتَّى يُنْطَلَقَ بِي إِلَى أَحَدِ الصَّفَّيْنِ أَوْ إِحْدَى الْفِسَتَيْنِ فَضَرَبَنِي رَجُلٌ بِسَيْفِهِ أَوْ يَجِيءُ سَهْمٌ فَيَقْتُلُنِي قَلَ يَبُو ءُ بِاءِثْمِهِ وَإِثْمِكَ وَيَكُونُ مِنْ أَصْحَابِ النَّارِ
“ অচিরেই বিভন্ন রকম ফিতনার আবির্ভাব ঘটবে। ফিতনার সময় বসে থাকা ব্যক্তি ফিতনার দিকে পায়ে হেঁটে অগ্রসরমান ব্যাক্তির চেয়ে এবং পায়ে হেঁটে চলমান ব্যক্তি আরোহী ব্যক্তি অপেক্ষা অধিক নিরাপদ ও উত্তম হবে। ফিতনা শুরু হয়ে গেলে যার উট থাকবে সে যেন উটের রাখালি নিয়ে ব্যস্ত থাকে এবং যার ছাগল আছে সে যেন ছাগলের রাখালি নিয়ে ব্যস্ত থাকে । আর যার চাষাবাদের যমিন আছে, সে যেন চাষাবাদের কাজে ব্যস্ত থাকে। এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলোঃ হে আল্লাহর নবী! যার কোন কিছুই নেই সে কি করবে? নবী (ছাঃ) বললেনঃ পাথর দিয়ে তার তলোয়ারকে ভোঁতা করে ফেলে নিরস্ত্র হয়ে যাবে এবং ফিতনা থেকে বাঁচতে চেষ্টা করবে। অতঃপর তিনি বলেনঃ হে আল্লাহ! আমি কি আমার দায়িত্ব পৌঁছে দিয়েছি? হে আল্লাহ! আমি কি আমার দায়িত্ব পৌছে দিয়েছি! হে আল্লাহ আমি কি আমার দায়িত্ব পৌছে দিয়েছি? অতঃ পর অন্য এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলোঃ হে আল্লাহর রাসূল! কেউ যদি আমাকে জোর করে কোন দলে নিয়ে যায় এবং সেখানে গিয়ে কারো তলোয়ার বা তীরের আঘাতে আমি নিহত হই তাহলে আমার অব্যস্থা কি হবে? উত্তরে নবী (ছাঃ ) বললেনঃ
“ সে তার পাপ এবং তোমার পাপের বোঝা নিয়ে জাহান্নামের অধিবাসী হবে”। (মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুলঃ ফিতান।)
ফিতনার সময় একজন মু’মিনের করণীয় হলোঃ
যাবতীয় গুনাহ থেকে তাওবা করাঃ
মানব জাতির জন্য আল্লাহর নির্ধারিত ফয়সালা এই যে গুনাহ ও পাপাচারিতা ব্যতীত বিপদ আসেনা এবং বিপদ এসে গেলে তাওবা ব্যতীত তা দূর হয়না। তাই ফিতনা ও বিপদাপদের সময় যাবতীয় গুনাহ ও পাপের কাজ থকে আল্লাহর কাছে তাওবা করা আবশ্যক।
আল্লাহর নির্ধারিত ফয়সালর প্রতি সন্তুষ্ট থাকাঃ
মু’মিন ব্যক্তি আল্লাহর নির্ধারিত ফয়সালার প্রতি সন্তষ্ট থাকবে এবং বিশ্বাস করবে যে পৃথিবীতে যা কিছু হচ্ছে ও হবে তা সবই মহান আল্লাহর ইচ্ছাতেই । আল্লাহ এমন কোন জিনিষ সৃষ্টি করেন নি যাতে শুধুমাএ অকল্যান বিদ্যমান; বরং কখনও মু’মিনের জন্য আল্লাহ এমন কিছু বিষয় নির্ধারণ করেন, যা বাহ্যিক দৃষ্টিতে অকল্যাণকর মনে হয়, অথচ তাতে রয়েছে অপরিমিত কল্যান। মহান আল্লাহ মু’মিন জননী আয়েশা (রাঃ) এর প্রতি আরোপিত মিথ্যা অপবাদের ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত করে বলেনঃ
لَا تَحْسَبُوهُ شَرًّا لَّكُم ۖ بَلْ هُوَ خَيْرٌ لَّكُمْ
“ তোমরা এ ঘটনাকে অকল্যাণকর বলে মনে করোনা; বরং এটি তোমাদের জন্য মঙ্গলজনক”। (সূরা নূরঃ ১০) আল্লাহ তা’আলা আরো বলেনঃ
فَعَسَىٰ أَن تَكْرَهُوا شَيْئًا وَيَجْعَلَ اللَّهُ فِيهِ خَيْرًا كَثِيرًا
“হয়তো তোমরা কখনও এমন কোন বিষয়কে অপছন্দ করবে যাতে আল্লাহ অপরিমিত কল্যাণ নিহিত রেখেছেন”। ( সূরা নিসাঃ১৯)
রাসূল (ছাঃ) এর ভবিষ্যৎ বাণীর বাস্তবায়নঃ
নবী করীম (ছাঃ) সংবাদ দিয়েছেন যে, এই উম্মাতের উপর দিয়ে বিভিন্ন বিপদাপদ ও ফিতনার ঝড় বয়ে যাবে এবং তিনি এই বিপদ থেকে মুক্তি পাওয়ার পথও বলে দিয়েছেন। তিনি বলেনঃ
تَرَكْتُ فِيكُمْ اَمْرَيْنِ لَنْ تَضِلُّو مَا تَمَسَّكْتُمْ بِهِمَا: كِتَابَ اللَّهِ وَسُنَّةَ رَسُوْلِهِ
“ আমি তোমাদের জন্য এমন দু’টি বস্তু রেখে যাচ্ছি যা দৃঢ়ভাবে ধারণ করলে তোমরা কখনো পথভ্রষ্ট হবেনা। তা হলো আল্লাহর কিতাব ও তাঁর রাসূলের সুন্নাত”। (মু্আত্তা ইমাম মালেক।ইমাম আলবানী বলেন হাদীছটি হাছান, মিশকাতুল মাসাবীহ, হাদীছ নং- ১৮৬)
তিনি আরও বলেনঃ
“তোমরা আমার সুন্নাত এবং খোলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নাতের অনুসরণ করবে। তা দৃঢ়ভাবে ধারণ করবে এবং উহার উপর অটল থাকবে। আর তোমরা নতুন নতুন বিষয় উদ্ভাবন করা হতে বিরত থাকবে। কেননা প্রতিটি নব আবিস্কৃত বিষয়ই বিদআত এবং প্রতিটি বিদআ’তের পরিণামই ভ্রষ্টতা”। (আউ দাউদ, অধ্যায়ঃ কিতাবুস সুন্নাহ। ইমাম আলবানী সহীহ বলেছেন, সিলসিলায়ে সহীহা, হাদীছ নং-১৭৬১)
আল্লাহ তা’আলা রাসূল (ছাঃ) এর সুন্নাতের অনুসরণের আদেশ দিয়ে বলেনঃ
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَطِيعُوا اللَّهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ وَأُولِي الْأَمْرِ مِنكُمْ ۖ فَإِن تَنَازَعْتُمْ فِي شَيْءٍ فَرُدُّوهُ إِلَى اللَّهِ وَالرَّسُولِ إِن كُنتُمْ تُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ ۚ ذَٰلِكَ خَيْرٌ وَأَحْسَنُ تَأْوِيلًا
“হে ঈমানদারগণ তোমরা আল্লাহর আনুগত্য করো এবং রাসূলের আনুগত্য কর। আরো আনুগত্য কর তোমাদের নেতাদের। তোমাদের মাঝে যখন কোন বিষয়ে মতবিরোধ দেখা দিবে তখন তোমরা তার সমাধানের জন্য আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূলের দিকে ফিরে আসবে যদি তোমারা আল্লাহর প্রতি এবং পরকালের প্রতি বিশ্বসী হয়ে থাকো। ইহাই তোমাদের জন্য কল্যাণকর ও পরিণামের দিক দিয়ে উত্তম”।
(সূরা নিসাঃ৫৯)
ফিতনা থেকে দূরে থাকাঃ
মু’মিন ব্যক্তি ফিতনা থেকে দূরে থাকবে এবং এ ব্যাপারে কথা বলা থেকেও বিরত থাকবে। কেননা নবী (ছাঃ) ফিতনার নিকটবর্তী হতে নিষেধ করেছেন। হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসূল (ছাঃ) বলেছেনঃ
“ অচিরেই বিভিন্ন রকম ফিতনার আবির্ভাব ঘটবে। ফিতনার সময় বসে থাকা ব্যক্তি দাঁড়ানো ব্যক্তির চেয়ে, এবং দাঁড়ানো ব্যক্তি পায়ে হেঁটে চলমান ব্যক্তির চেয়ে এবং পায়ে হেটে চলমান ব্যক্তি আরোহী ব্যক্তি অপেক্ষা অধিক নিরাপদ থাকবে। যে ব্যক্তি ফিতনার দিকে এগিয়ে যাবে সে ফিতনায় জড়িত হয়ে পড়বে এবং ধ্বংস হবে। আর যে ব্যক্তি ফিতনা থেকে বাঁচার কোন আশ্রয় পাবে সে যেন তথায় আশ্রয় গ্রহণ করে”। (বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ফিতান)
ফিতনার সময় বিভ্রান্তিকর প্রচারণা থেকে সাবধান থাকাঃ
মিথ্যা সংবাদ প্রচারকারীরাই অনেক সময় নানা সমস্যা, ফিতনা ও বিপর্যয়ের কারণ হয়ে থাকে। তারা এমন সংবাদ প্রচার করে যা বাস্তবের সাথে কোন সম্পর্ক রাখেনা। বিশেষ করে যখন অধিকাংশ প্রচার মাধ্যম ইসলামের শত্রুদের হাতে। আল্লাহ তা’আলা আমাদেরকে সকল সংবাদ যাচাই করার নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ তা,আলা বলেনঃ
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِن جَاءَكُمْ فَاسِقٌ بِنَبَإٍ فَتَبَيَّنُوا
“হে ঈমানদারগণ! তোমাদের কাছে যদি ফাসিক ব্যক্তি কোন খবর নিয়ে আসে তোমারা তা যাচাই করে দেখ”। (সূরা হুজুরাতঃ ৬) আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ
وَإِذَا جَاءَهُمْ أَمْرٌ مِّنَ الْأَمْنِ أَوِ الْخَوْفِ أَذَاعُوا بِهِ ۖ وَلَوْ رَدُّوهُ إِلَى الرَّسُولِ وَإِلَىٰ أُولِي الْأَمْرِ مِنْهُمْ لَعَلِمَهُ الَّذِينَ يَسْتَنبِطُونَهُ مِنْهُمْ
“তাদের কাছে যখন নিরাপদ বা ভীতি সংক্রান্ত কোন সংবাদ আসে তখন তারা তা প্রচার করে বেড়ায় তারা যদি রাসূল (ছাঃ) এবং জ্ঞানীদের কাছে আসতো তাহলে তাদের আলেমগণ অবশ্যই প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করেত পারতেন”। (সূরা নিসাঃ৮৩)
ফিতনা সময় ঐক্যবদ্ধ থাকাঃ
ফিতনার সময় মুসলমানদের জামাআ’ত ও তাদের ইমামকে আঁকড়িয়ে ধরতে হবে। রাসূল (ছাঃ) হুযায়ফাকে এই উপদেশই দিয়েছন। হুযায়ফা (রাঃ) ফিতনার সময় করণীয় সম্পের্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেনঃ “তুমি মুসলমানদের জামাআ’ত ও তাদের ইমামের অনুসরণ করবে। হুযায়ফা বলেনঃ আমি বললামঃ তখন যদি মুসলমানদের কোন জামাআ’ত ও ইমাম না থাকে? তিনি বললেনঃ তাহলে তুমি ফিতনা সৃষ্টিকারী সকল ফির্কা পরিত্যাগ করবে। মৃত্য পর্যন্ত তুমি এ অবস্থায় থাকবে”। (মুসলিম, অধ্যায়ঃ মুসলমানদের জামা’আতকে আকড়িয়ে ধরা ওয়াজিব।)
ফিতনা থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করাঃ
নবী (ছাঃ) নামাযের মধ্যে আল্লাহর কাছে ফিতনা থেকে আশ্রয় চেয়েছেন। তিনি এভাবে বলতেনঃ
اللَّهُمَّ إِنَّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِالْمَسِيحِ الدَّجَّال وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَفِتْنَةِ الْمَمَاتِ
“হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে কবরের আযাব থেকে আশ্রয় চাই। হে আল্লাহ আমি আপনার কাছে মিথ্যুক দাজ্জালের ফিতনা থেকে আশ্রয় চাই। হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে জীবন ও মরণের ফিতনা থেকে আশ্রয় চাই”।(বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ফিতান)
ফিতনার সময় ধীরস্থীরতা অবলম্বন করাঃ
তাড়াহুড়া করা যদি আনন্দের সময় দোষণীয় হয়ে থাকে তাহলে বিপদের সময় কেমন হবে? হাদীছে এসেছে যে আখেরাতের কাজ ব্যতীত প্রতিটি কাজেই ধীরস্থীরতা অবলম্বন করা ভাল। অর্থাৎ আখেরাতের কাজে প্রতিযোগিতার সাথে অগ্রসর হতে হবে। আর ফিতনার সময় সব সময় পিছিয়ে থাকতে হবে।
ফিতনার সময় ইবাদতে লিপ্ত থাকাঃ
রাসূল (ছাঃ) বলেনঃ “ফিতনার সময় আল্লাহর ইবাদতে লিপ্ত থাকা আমার নিকট হিজরত করে আসার মত”। (মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ফিতান।)
মু’মিনদের সাথে বন্ধুত্ব রাখাঃ
ফিতনার সময় মু’মিনদেরকে সাহায্য-সহযোগিতা করা এবং কাফেরদের সাথে সকল প্রকার সম্পর্কহীনতা ঘোষনা করা, তাদেরকে ঘৃনা করা এবং তাদের সাথে শত্রুতা পোষন করা। শির্কের অবসান না হওয়া পর্যন্ত আল্লাহ আমাদেরকে কাফেরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আদেশ দিয়েছেন। আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ
وَقَاتِلُوهُمْ حَتَّىٰ لَا تَكُونَ فِتْنَةٌ وَيَكُونَ الدِّينُ كُلُّهُ لِلَّهِ
“তোমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর ফিতনার (শির্ক) অবসান না হওয়া পর্যন্ত এবং দ্বীন পরিপূর্ণরুপে আল্লাহর জন্য নির্দিষ্ট না হওয়া পর্যন্ত”। (সূরা আনফাল ৩৯)
ফিতনার সময় বেশী বেশী দু’আ করাঃ
বিপদাপদ ও ফিতনা থেকে বেঁচে থাকার জন্য দু’আ একটি উত্তম মাধ্যম। দু’আর ফজীলত এই যে’ আকাশ থেকে মুসীবত আসার সময় দু’আর সাথে সাক্ষাৎ হয়। দু’আ ও মুসীবত আকশে পরস্পর ঝগড়ায় লিপ্ত হয়। আকাশ থেকে মুসীবত নাযিল হতে চায়। আর দু’আ তাকে বাঁধা দেয়।
ফিতনার সময় ধৈর্য ধারন করাঃ
মু’মিন ব্যক্তির সকল কাজই ভাল। কল্যান অর্জিত হওয়ার সময় যদি শুকরিয়া আদায় করে তবে তার জন্য ইহাই ভাল। আর বিপদাপদের সময় যদি ধৈর্য্য ধারন করে তাও তার জন্য ভাল। যেমন আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ
إِنَّمَا يُوَفَّى الصَّابِرُونَ أَجْرَهُم بِغَيْرِ حِسَابٍ
“ নিশ্চয় ধর্য্যশীলদের প্রতিদান পরিপূর্ণরুপে প্রদান করা হবে”। (যুমারঃ১০) হাদীছে এসেছে মু’মিন ব্যক্তি সব সময় মুসিবতের মধ্যে থাকে। পরিণামে সে আল্লাহর সাথে নিস্পাপ অবস্থায় সাক্ষাৎ করে।
ফিতনার সময় দ্বীনের জ্ঞানার্জনের প্রতি গুরত্ব প্রদান করাঃ
দ্বীনের সঠিক জ্ঞান অর্জনই ফিতনা থেকে মুক্তি পাওয়ার একমাএ উপায়। রাসূল (ছাঃ) বলেনঃ
“আল্লাহ যার কল্যান চান তাকে দ্বীনের জ্ঞান দান করেন”।(বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ইলম।)
দ্বীনের জ্ঞান অর্জনের সাথে সাথে শত্রু দের চক্রান্ত, পরিকল্পনা, ও তাদের অবস্থা সম্পর্কেও সম্যক ধারণা রাখতে হবে, যাতে তাদের অনিষ্টতা থেকে বাঁচার জন্য সতর্কতা অবলম্বন করা য়ায়।
স্বস্তি ও আশার বাণী করাঃ
মু’মিনদের দু’টি কল্যানের একটি অবশ্য অর্জিত হবে। একটি শাহাদাত ও অপরটি বিজয়। আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ
قُلْ هَلْ تَرَبَّصُونَ بِنَا إِلَّا إِحْدَى الْحُسْنَيَيْنِ ۖ وَنَحْنُ نَتَرَبَّصُ بِكُمْ أَن يُصِيبَكُمُ اللَّهُ بِعَذَابٍ مِّنْ عِندِهِ أَوْ بِأَيْدِينَا ۖ فَتَرَبَّصُوا إِنَّا مَعَكُم مُّتَرَبِّصُونَ
“হে নবী! আপনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করুন! তোমরা কি আমাদের ব্যাপারে দু’টি কল্যানের একটির অপেক্ষায় আছো? আমরাও তোমাদের ব্যাপারে অপেক্ষায় আছি যে, হয়ত আল্লাহ তোমাদেরকে নিজের পক্ষ থেকে অথবা আমাদের হাতে শাস্তি প্রতদান করবেন। সুতরাং তেমরা অপেক্ষায় থাক আমারাও তোমাদের সাথে অপেক্ষা করতে থাকবো”। (সূরা তাওবাঃ ৫২)
মু’মিনদের পরিণাম হবে জন্নাত। আর কাফেরদের পরিণাম হবে জাহান্নাম। এ জন্যেই তারা তাদের কৃতকর্মের কারণে মৃত্যুকে ভয় করে এবং তা থেকে পলায়ন করতে চায়।
মন্তব্য করুন