দুই নামাযকে কোন ওয়াক্তে একত্রিত করার হুকুম
প্রবন্ধটি পড়া হলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
শুরু করছি মহান আল্লাহর নামে যিনি পরম করুনাময়, অসীম দয়ালু
প্রত্যেক নামাযের কার্যাবলী নির্ধারিত সময়ে আদায় করা ওয়াজিব। আর এটাই হলো মৌলিক বিষয় কিন্তু বিশেষ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে দুই ওয়াক্তের নমায একত্রিত করে পড়ার প্রয়োজন দেখা দিলে তারও অনুমতি রয়েছে। বরং এরও আদেশ দেয়া হয়েছে, আর এটাই আল্লাহ তা‘আলার নিকট অতিপ্রিয় যা ইসলামী জীবন ব্যবস্থার অনুকুল। আল্লাহ তাঁর কালামের মাধ্যমে এর দিকে ইঙ্গিত করেছেন:
“আল্লাহ তোমাদের কাজ সহজ করে দিতে চান, কোনরূপ কঠোরতা আরোপ বা কঠিন করে ভার দেয়া আল্লাহর ইচ্ছা নয়”। [২-১৮৫]
তিনি আরো বলেন:
“তিনি তোমাদেরকে নিজের কাজের জন্য বাছাই করে নিয়েছেন এবং দ্বীনের ব্যাপারে তোমাদের উপর কোন সংকীর্ণতা চাপিয়ে দেননি। [২২-৭৮]
এ সম্পর্কে সহীহ বুখারীতে আবু হুরায়রা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে একটি বর্ণনা আছে- নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইরশাদ করেন, “নিশ্চয়ই দ্বীন তথা ইসলামী জীবন ব্যবস্থা সহজ। যে ব্যক্তি তাকে কঠোর করবে, তা তার পক্ষে কঠোর হয়ে পড়বে। সুতরাং তোমরা কঠোরতা ত্যাগ করে মধ্যমপন্থা অবলম্বন করবে এবং পরিমিতভাবে কাজ করবে, কল্যাণের সুসংবাদ দিবে।”
বুখারী ও মুসলিমে আবু মূসা আল-আশআরী (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকেও অনুরূপ বর্ণনা রয়েছে, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আবু মূসা এবং মু‘আযকে ইয়ামান প্রদেশে প্রেরনের সময় উপদেশ দান করেন- “তোমরা লোকদের জন্য সহজসাধ্য কাজের নির্দেশ করবে; কষ্টদায়ক কাজের নির্দেশ করবে না; সুসংবাদ দিবে, নৈরাশ্যজনক কথা বলে ভীতশ্রদ্ধ করবে না বরং ঐক্য সহকারে কাজ করবে; মতানৈক্য সৃষ্টি করবে না।”
সহীহ মুসলিমের অন্য একটি রেওয়ায়েতে আছে আবু মূসা থেকে বর্ণিত। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর কোন সাহাবীকে কোন কাজে প্রেরণ করলে উপদেশ দিতেন, সুসংবাদ দিবে, নৈরাশ্যজনক কথা বলে ভীতশ্রদ্ধা করবে না, তোমরা লোকদের জন্য সহজসাধ্য কাজের নির্দেশ করবে, কষ্টদায়ক কাজের নির্দেশ করবেনা।” তাছাড়া বুখারী ও মুসলিমে আনাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে অনুরূপ বর্ণনা রয়েছে।
এটা স্পষ্ট করার পর আমাদের জানা দরকার যে, বিভিন্ন হাদীসে পরিষ্কারভাবে কয়েকটি স্থানে যোহর ও আসর এবং মাগরিব ও ইশার দুই ওয়াক্তের নামায একত্রে পড়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে, সে স্থানগুলো হচ্ছে,
১. সফরে: কোথায়ও যাতায়াতকালে অথবা অবস্থান কালে উভয়াবস্থায় দু’ওয়াক্তের নামায একত্রে পড়া যায়।
সহীহ বুখারীতে আনাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন: নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পথ চলা অবস্থায় মাগরিব ও ঈশার নামায একত্রে পড়তেন।
সহীহ মুসলিমেও আনাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত আছে-তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সফরে দু’নামায একত্রে পড়ার ইচ্ছা পোষণ করলে যোহরকে আসরের প্রথম ওয়াক্ত পর্যন্ত দেরী করতেন। অত:পর উভয় নামায একত্রে পড়তেন।
সহীহ মুসলিমে আব্দুল্লাহ ইব্ন আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত আছে- নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাবুক যুদ্ধের সফরে দু’ নামায একত্রে পড়েছেন।
সহীহ মুসলিমে মু’আয ইব্ন জাবাল (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত আছে- তিনি বলেন: আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সঙ্গে তাবুক যুদ্ধে রওয়ানা হয়েছিলাম। তিনি যোহর এবং আসর, একত্রে আদায় করেন এবং মাগরিব ও ঈশা একত্রে পড়েন।
সহীহ বুখারীতে আছে-আবু হুযাইফা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি যখন নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর নিকট আগমন করেন তখন তিনি দুপুরের সময় অর্থাৎ যোহরের সময় মক্কা শরীফের আবতাহ নামক স্থানে অবস্থান করছিলেন। বর্ণনাকারী বলেন: বেলাল (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বের হয়ে নামাযের আজান দেন ও পরে ভিতরে প্রবেশ করে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর ওযূর অবশিষ্ট পানি নিয়ে আগমন করলে সাহাবীগণ ঐ পানি গ্রহণের জন্য ভীড় জমায়। আবার প্রবেশ করে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর লাঠি বের করেন। অতপর তিনি চামড়ার বানানো তাঁবু থেকে বের হন। বর্ণনাকারী বলেন: আমি যেন নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর পায়ের ছোট গিরার উপরে শুভ্র অংশটা দেখতে পাচ্ছি। তিনি তাঁর লাঠিটা মাটিতে পুঁতে দিলেন। অত:পর যোহর ও আসর দুই দুই রাকাআত করে নামায আদায় করেন।
এ সকল হাদীস দ্বারা স্পষ্ট বুঝা যায় যে, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সফরের মধ্যে অবস্থানকালীন অবস্থায় দু নামায একত্রে আদায় করেছেন। একত্রে নামায পড়ার অনুমতি রয়েছে এটা জানানোর জন্য এরূপ করা প্রয়োজন ছিল। আর এটা সত্য যে, হজ্জের সময় মিনায় অবস্থানকালে দু’ নামায একত্রে পড়েন নি! এ কথার উপর ভিত্তি করে আমরা বলতে পারি যে, অবস্থানকারী মুসাফিরের জন্য দু নামায একত্রে না পড়াটাই উত্তম হবে, আর যদি একত্রে পড়ে তবে কোন গুনাহ হবে না। হ্যাঁ একত্রে নামায পড়ার প্রয়োজন পড়তে পারে, ক্লান্তির পর বিশ্রামের জন্য অথবা প্রতি ওয়াক্তে পানির সন্ধান করা কঠিন মনে করে, ঐসব কারণে অব্যাহতির সুযোগ গ্রহণ করে দু’নামায একত্রে পড়াই উত্তম হবে।
আর ভ্রাম্যমান মুসাফিরের জন্য যোহর, আসর এবং মাগরিব ও ঈশা সহজ পন্থা অবলম্বনে একত্রে পড়াটাই উত্তম। “জমা তাকদীম” (অগ্রিম একত্রীকরণ) যে দ্বিতীয় ওয়াক্তের নামাযটা প্রথম ওয়াক্তের আদায় করে অথবা “জমা তা’খীর” (পরবর্তীতে একত্রীকরণ) প্রথম ওয়াক্তের নামাযটা দ্বিতীয় ওয়াক্তে আদায় করা।
সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে আনাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত আছে- রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সূর্য পশ্চিম আকাশ ঢলে পড়ার পূর্বেই যদি প্রস্থান করতেন তবে যোহরকে আসরের ওয়াক্ত পর্যন্ত পিছিয়ে দিতেন অত:পর অবতরণ করে দু’নামায একত্রে আদায় করতেন। আর মনযিল ত্যাগের পূর্বেই যদি সূর্য ঢলে যেত তখন তিনি যোহরের নামায পড়ে আরোহন করতেন।
২. প্রয়োজনের খাতিরে দু’ওয়াক্তের নামায একত্রে পড়ার অনুমতি পরিত্যাগ করা উচিত নয়, চাই যে কোন অবস্থায়ই হোক, গৃহে অবস্থানকালে অথবা সফরে। কেননা, সহীহ মুসলিমে ইব্ন আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত আছে-নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মদীনা অবস্থানকালে যোহর ও আসর একত্রে এবং মাগরিব ও ঈশার নামায একত্রে আদায় করেছেন। সেখানে না ছিল কোন ভয় এবং না ছিল বৃষ্টিপাত। বলা হলো এরূপ কেন করলেন? তিনি বললেন যাতে উম্মতের অসুবিধা না হয়।
মু‘আয ইব্ন জাবাল (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত আছে-তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাবুকের যুদ্ধে যোহর ও আসর একত্রে এবং মাগরিব ও ঈশার নামায একত্রে আদায় করেছেন। জিজ্ঞেস করা হলো এরূপ করতে তাঁকে কিসে উদ্বুদ্ধ করলো? তিনি বললেন: তাঁর ইচ্ছা যাতে তাঁর উম্মতের অসুবিধা না হয়। উক্ত হাদীস দু’টিতে এটাই প্রমাণ করে যে, যখনই দু’ ওয়াক্তের নামায একত্রে পড়ার প্রয়োজন হবে, আর তখন তার অনুমতি রয়েছে, সেটা গৃহে অবস্থানকালে হোক অথবা সফরে।
শাইখুল ইসলাম ইব্ন তাইমিয়া (র) বলেন, এ সকল হাদীস প্রমাণ করে যে, উম্মতের অসুবিধা দূর করার জন্য দু’নামায একত্রে পড়ার অনুমতি রয়েছে। আর একথাও প্রমাণ করে যে, যে রোগের কারণে রোগীর উপর পৃথকভাবে তথা ওয়াক্তে ওয়াক্তে নামায পড়ার অসুবিধা হয়। সে উত্তমভাবেই কয়েক ওয়াক্তের নামায একত্রে পড়তে পারে।
মুস্তাহাযা (সর্বদা রক্তপ্রদর) ও অন্যান্য অসুখের কারণে প্রত্যেক ওয়াক্তের পুন: পবিত্রতা অর্জন করা সম্ভব হচ্ছে না এমন রোগীর দু’ওয়াক্তের নামায একত্রে আদায় করতে পারে।
“আল-ইনসাফ’ নামক পুস্তকে শাইখুল ইসলাম ইব্ন তাইমিয়ার একটি ফাতওয়া পাওয়া যায় যে, যদি নামায তার নির্ধারিত ওয়াক্তে আদায় করলে জামায়াত হয় না, এমতাবস্থায় উভয় নামায একত্রে আদায় করা যায়। এর দলীল ইব্ন আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) এর হাদীস, যাতে বৃষ্টির কারণ উভয় নামায একত্রে আদায় করার অনুমতি আছে এটা একমাত্র জামায়াতে নামায পড়ার উদ্দেশ্যে ছিল। কেননা, প্রত্যেকেরই এটা নামাযের ওয়াক্তে একাকী পড়ে নেয়া সম্ভব ছিল। আর জামায়াত ছাড়াই বৃষ্টি থেকে বেঁচে যেত।
৩. হজ্বের দিনগুলোতে আরাফা ও মুজদালিফায় দু’নামায একত্রে আদায় করার বিধান:
সহীহ মুসলিমে জাবের ইব্ন আব্দুল্লাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত আছে- নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর হজ্জের বর্ণনায় রয়েছে যে, তিনি আরাফাতে আগমন করলে তাঁর অনুমতিতে তাঁর জন্য একটি চামড়ার তাঁবু বানিয়ে দেয়া হয় সেখানে তিনি সূর্য ঢলে পড়া পর্যন্ত অবস্থান করেন।
অতপর পথ চলার জন্য উটের লাগাম প্রস্তুত করার আদেশ দেন। তারপর তিনি সে মনযিল ত্যাগ করে “বাতনে ওয়াদী” নামক স্থানে উপস্থিত জনতার সামনে খুৎবা দেন। বর্ণনাকারী বলেন- সেখানে আযান দেয়া হলে ইকামাত দেয়ার পর যোহরের নামায আদায় করেন। অত:পর দ্বিতীয়বার ইকামাত দেয়া হলে আসরের নামায আদায় করেন। আর উভয় নামাযের মধ্যে অন্য কোন নামায আদায় করেন নি।
আর সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে উসামা ইব্ন যায়েদ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত আছে- তিনি আরাফা থেকে মুযদালিফায়ে গমনে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর পিছনে একই যানবাহনে ছিলেন। তিনি বলেন- পথিমধ্যে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একস্থানে অবতরণ করে প্রস্রাব করেন এবং সাধারণভাবে ওযূর কার্য সমাধা করেন। আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম “নামায” । জবাবে তিনি বললেন- নামায তোমার অগ্রবর্তী স্থানে। অত:পর তিনি যানবাহনে আরোহন করে মুযদালিফায় এসে অবতরণ করেন। সেখানে তিনি অতি উত্তমভাবে ওযু করেন। এরপর নমাযের ইকামাত দেয়া হলে মাগরিবের নামায আদায় করেন। সেখানে সকলে নিজ নিজ উট স্বীয় স্থানে বসান। অত:পর ঈশার নমাযের ইকামাত দেয়া হলে ঈশার নামায আদায় করেন। আর উভয় নমাযের মাঝে অন্য নামায পড়েননি।
সহীহ মুসলিমে জাবের (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত আছে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মুযদালিফাতে মাগরিব ও ঈশার নামায এক আযানে এবং দুই ইকামাতে আদায় করেন।
উক্ত হাদীসদ্বয় থেকে জানা যায় নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আরাফাতে যোহর ও আসর একত্রে আদায় করেন। এটা ছিল তাঁর “জমা তাকদীম” অর্থাৎ যোহরের ওয়াক্তে আসরের নামাযটাও পড়ে নেয়া। আর মাগরিব ও ঈশা একত্রে পড়াটা ছিল “জমা তা’খীর”। (অর্থাৎ মাগরিবের নামায দেরী কের ঈশার নামাযের একটু অগ্রভাগে পড়ে নেয়া)।
এ দু’ নামায একত্রে পড়া সম্পর্কে আলেমদের মাঝে মতানৈক্য থাকায় আমরা ভিন্ন ভিন্নভাবে আলোচনা করছি। বলা হয় যে, এটা ছিল সফরে। এতে চিন্তা ও আলোচনার প্রয়োজন আছে, কারণ নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আরাফার পূর্বে মিনাতে একত্রে পড়েন নি অনুরূপভাবে আরাফা থেকে ফিরে মিনায় আসার পরও একত্রে দু নামায পড়েন নি। আরো বলা হয় যে, এটা ছিল হজের কারণে। এতেও আলোচনার ও চিন্তার বিষয় আছে। কেননা, যদি তাই হয়, তবে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইহরাম বাঁধার সময় থেকেই দু’নামায একত্রে পড়তেন। (সুতরাং তিনি যেহেতু তা করেন নি, তাই এটা বলা যাবে না যে, তিনি হজের কারণেই জমা করেছেন।)
আর এটাও বলা হয় যে, এটা ছিল মাসলাহাত বা স্বার্থ ও প্রয়োজনের তাগিদে। এটাই অধিক গ্রহণযোগ্য মত। কারণ, আরাফাতে অধিক সময় অবস্থান করা এবং দু’আর জন্য নামায একত্রে আদায় করেছেন। কেননা, মানুষ সেখানে বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করে। সকলকে নামাযের জন্য একত্রিত হতে হলে তা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। আর যদি একাকি নামায পড়ে, তবে জামায়াতে পড়ার একটা বড় রকমের মহত্ব ছুটে যায়। অনুরূপভাবে মুযদালিফাতে দু’নামায একত্রে আদায় করা অতি জরুরী। কেননা, মানুষ সূর্যাস্তের পর আরাফাত থেকে রওয়ানা হয়। আর যদি মাগরিবের নামায পড়ার জন্য বাধা দেয়া হয়, তাহলে মানুষ বিনয় ও নম্রতা ছাড়াই নামায আদায় করবে। আর যদি রাস্তায় নামায পড়ে তাহলে এটা সুকঠিন হবে। অতএব মাগরিবের নামাযকে ঈশার নামাযের সময় পর্যন্ত বিলম্ব করা প্রয়োজন।
এভাবে সঠিক সময়ে নামাযকে একত্রিত করার উদ্দেশ্য হলো, নামাযের মধ্যে আল্লাহ্ভীতি ও বিনয় প্রকাশের প্রতি দৃষ্টি রাখা এবং বান্দার সুবিধার দিক লক্ষ্য রেখে এ পথ অবলম্বন করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাময়, দয়াময়ের পবিত্রতা বর্ণনা করে আমরা তাঁর দরবারে আবেদন জানাই, তিনি যেন আমাদেরকে স্বীয় হিকমত ও রহমত দান করেন। যেহেতু তিনিই একমাত্র দানকারী। সকল প্রশংসা মহান আল্লাহর জন্য যিনি সারা জাহানের মালিক, যার অনুগ্রহে এ সৎ কাজটি সম্পন্ন হলো।
অগণিত দরুদ ও সালাম বর্ষিত হোক আমাদের নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর উপর, যিনি সৃষ্টি জগতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ। তাঁর বংশধর, সাহাবী, তাবেয়ী যারা সৎ কর্মের অনুসরণে সময় ব্যয় করেছেন তাদের উপরও দরূদ ও সালাম।
মন্তব্য করুন