যাদু কি? | বান মারা, জ্বীন চালান (Magic)
প্রবন্ধটি পড়া হলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
শুরু করছি মহান আল্লাহর নামে যানি পরম করুনাময়, অসীম দয়ালু।
লেখক: ওয়াহীদ বিন আব্দুস সালাম বালী
জাদু (magic) একটি পারফরমিং আর্ট বা পরিবেশনমূলক শিল্প। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়-উপকরণ ব্যবহার করে অসম্ভব বিভ্রম বা আপাত দৃষ্টিতে অতিপ্রাকৃত ঘটনার জন্ম দেয়ার মাধ্যমে দর্শক-শ্রোতাদের আনন্দ দেয়াই জাদু। এগুলোকে জাদুর কৌশল, বিভিন্ন ইফেক্ট বা বিভ্রম হিসেবে আখ্যায়িত করা যেতে পারে।
আরোও পড়ুন ⇒ ক্রিসমাস ট্রি সাজানো-Christmas Tree
যাদুর আভিধানিক অর্থ:
লাইছ বলেনঃ যাদু হল এমন কর্ম যার মাধ্যমে শয়তানের নিকটবর্তী হয়ে তার সাহায্য নেয়া হয়।
আজহারী বলেনঃ মূলতঃ যাদু হল বস্তুর বাস্তবতাকে অবাস্তবে পরিণত করা।
ইবনে ফারেস বলেনঃ অসত্যকে সত্য বলে দেখানোকেই যাদু বলা হয়।
শরীয়তের পরিভাষায় যাদুর সংজ্ঞা:
ফখরুদ্দীন আর-রাযী বলেনঃ “শরীয়তের পরিভাষায় যাদু প্রত্যেক এমন নির্ধারিত বিষয়কে বলা হয় যার কারণ গোপন রাখা হয় এবং এর বাস্তবতার বিপরীত কিছু প্রদর্শন করা হয়। আর তা ধোকা ও মিথ্যার আশ্রয়ভুক্ত।” (আল মিসবাহুল মুনীরঃ ২৬৮)
আরোও পড়ুন ⇒বড় দিন বা ক্রিসমাস (Christmas) কি?
ইবনে কুদামা বলেনঃ “যাদু হল এক গিরা-বন্ধন, মন্ত্র ও এমন কথা যা যাদুকর পড়ে অথবা লিখে অথবা এমন কোন কাজ করে যার মাধ্যমে যাদুকৃত ব্যক্তির শরীর, মন ও মস্তিষ্কের উপর পরোক্ষভাবে প্রভাব ফেলে। আর তার বাস্তবক্রিয়া রয়েছে। সুতরাং এর দ্বারা মানুষকে হত্যা করা হয়, অসুস্থ করা হয়, স্বামী-স্ত্রীর সহবাসে বাধা সৃষ্টি করা হয় এবং উভয়ের বিচ্ছেদ ঘটানো হয় এবং পরস্পরের মধ্যে বিদ্বেষ সৃষ্টি বা পরস্পরের মধ্যে প্রেম লাগিয়ে দেয়া হয়।” (আল-মুগনীঃ ১০/১০৪)
অতএব যাদুর প্রকৃতি হলো:
শয়তান ও যাদুকরের মাঝে এমন এক চুক্তি হয় যে, যাদুকর কতিপয় হারাম বা শিরকী কর্মে লিপ্ত হবে বিনিময়ে শয়তান তাকে সহযোগিতা করবে ও তার অনুসরণ করবে।
আরোও পড়ুন ⇒অনর্থক বিষয়ে নাক গলাবেন না
শয়তানের নিকটতম হওয়ার জন্য যাদুকরদের কতিপয় উপায়:
যাদুকরদের মধ্যে কেউ কেউ কুরআন মজীদ পায়ের নিচে দলিত করে পায়খানায় নিয়ে যায়, কেউ ময়লা বা জঘন্য জিনিস দ্বারা কুরআনের আয়াত লিখে থাকে, কেউ আয়াতকে উভয় পায়ের নিচে লিখে, কেউ সূরা ফাতেহাকে উল্টাভাবে লিখে, কেউ নিজের বসার স্থানের নিচে রাখে, তাদের কেউ বিনা ওযুতে নামায আদায় করে, কেউ সর্বদা নাপাক থাকে, তাদের কেউ আল্লাহর নাম না নিয়ে শয়তানের উদ্দেশ্যে যবাই করে যবাইকৃত পশুটি শয়তান নির্ধারিত স্থানে অর্পণ করে, কেউ তারকাকে সম্বোধন করে ও আল্লাহকে বাদ দিয়ে তার উদ্দেশ্যে সিজদা করে। কেউ কেউ উদ্দেশ্য সফল হওয়ার জন্য মা বা মেয়ের সাথে যিনা করে এবং কেউ কেউ আরবী নয় এরূপ অস্পষ্ট কুফরী কালামের চিত্র বা নক্সা লিখে দেয়।
এ দ্বারা স্পষ্ট হয়ে যায় যে জিন, শয়তান যাদুকরকে চুক্তি বা বিনিময় ব্যতীত কোন সাহায্য করে না বা তার কোন সেবা করে না। যাদুকর যত বড় কুফরীতে লিপ্ত হতে পারবে শয়তান তার ততবেশি অনুগত হবে ও তার ততদ্রুত কাজ সম্পাদন করে দিবে।
পক্ষান্তরে যাদুকর যদি শয়তানের পছন্দমত কুফরী কাজে ক্রটি বা উদাসীনতা করে তবে সে তার খেদমত হতে বিরত হয় ও তার অবাধ্য হয়ে যায়, সে আর তার অনুগত থাকে না। মূলতঃ শয়তান ও যাদুকর পম্পরের সহযোগী উভয়ে আল্লাহর অবাধ্যতায় মিলিত হয়।
উৎস (বই) : যাদুকর ও জ্যোতিষীর গলায় ধারালো তরবারি
আরোও পড়ুন ⇒তীব্র নিন্দা ও অপ্রীতিকর সমালােচনা যেভাবে নিবেন
আরোও পড়ুন ⇒কারাে ধন্যবাদ পাবার আশা করবেন না
মন্তব্য করুন