পায়ে কিছু বিঁধলে কী করবেন
পায়ে সুচালো কিছু বিঁধে ভেতরে ঢুকে থেকে গেলে সেটি অপসারণে সতর্ক থাকতে হবে। যদি সুচালো কিছু পায়ের খুব বেশি গভীরে বিঁধে না থাকে এবং তার বেশির ভাগ অংশই বাইরে বের হয়ে থাকে, তাহলে সতর্কতার সঙ্গে অপসারণের চেষ্টা করা যেতে পারে। তবে যদি এমন হয় যে বিঁধে থাকা বস্তুর বেশির ভাগ অংশই গভীরে ঢুকে গেছে এবং পায়ের বাইরে বের হয়ে থাকা অংশ সহজে বোঝা যাচ্ছে না, সে ক্ষেত্রে বেশি খোঁচাখুঁচি না করাই শ্রেয়। এ রকম হলে বিঁধে থাকা বস্তু নিজে বের করার চেষ্টা না করে কাছের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে তা অপসারণ করানোই বুদ্ধিমানের কাজ।
বাইরের সুচালো কিছু বিঁধে যাওয়া স্থান থেকে যদি ক্রমাগত রক্তক্ষরণ হতে থাকে, তাহলে একটা পরিষ্কার কাপড় বা গজ দিয়ে কাটা স্থানটি চেপে ধরে রাখতে হবে। ক্ষত খুব বেশি গভীর না হলে সর্বোচ্চ ১৫ থেকে ২০ মিনিট চাপ দিয়ে ধরে রাখলে রক্ত জমাট বেঁধে রক্তপাত বন্ধ হয়ে যাবে। সম্ভব হলে এক টুকরো বরফ পেঁচিয়েও ধরে রাখা যেতে পারে। পাশাপাশি ক্ষতস্থানটা উঁচু করে রাখলে খুব বেশি রক্তপাতের আশঙ্কাও কমে যায়। রক্তপাত বন্ধ হয়ে গেলে পরিষ্কার পানির প্রবহমান ধারায় আক্রান্ত জায়গাটা সাবান দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলতে হবে।
খেয়াল রাখতে হবে যেন ক্ষতস্থান এবং এর আশপাশে কোনো মাটি, বালু বা অপদ্রব্য লেগে না থাকে। পরিষ্কার করে ধুয়ে ফেলার পর বাড়িতে টিংচার আয়োডিন কিংবা আয়োডিনজাত অন্য জীবাণুনাশক থাকলে তা আক্রান্ত স্থানে পরিমাণমতো ব্যবহার করা যেতে পারে। বাড়িতে নিওমাইসিন জাতীয় অ্যান্টিবায়োটিক মলম থাকলে তা দিয়েও আক্রান্ত স্থানটিতে পাতলা প্রলেপের স্তর তৈরি করে দেওয়া যেতে পারে। সেই সঙ্গে ব্যথা প্রশমনের জন্য প্যারাসিটামল জাতীয় ব্যথানাশক ওষুধ সেবন করা যেতে পারে।
পায়ে কিছু ফুটে গেলে অনেকেই আক্রান্ত স্থানে গোবর, চুন, চক ইত্যাদি অপদ্রব্য প্রয়োগ করেন। এতে সংক্রমণের ঝুঁকি আরও বহুগুণ বৃদ্ধি পায়। যদি আক্রান্ত স্থানটিতে সুচালো কিছু বিঁধেই থাকে এবং তা বিনা জটিলতায় অপসারণে অসমর্থ হন, অত্যধিক রক্তপাত হয় কিংবা বিঁধে থাকা জিনিসটি অপসারণ করে ফেলার পরও আক্রান্ত স্থানটি ফুলে যায় ও লাল দেখায়, ব্যথা বেড়ে যায় বা ভিজে যেতে থাকে কিংবা জ্বর আসে, তবে বিলম্ব না করে নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। ঘুণাক্ষরেও কোনো ওঝা, কবিরাজ প্রভৃতি অপচিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন না। ধাতব কিংবা ময়লা মাটি বা বালুযুক্ত নোংরা বস্তু বিঁধে ক্ষত তৈরি হলে সতর্কতা হিসেবে এক ডোজ টিটেনাস ইনজেকশন নেওয়া উচিত। নোংরা বস্তু বিঁধে ক্ষত তৈরি হলে ক্ষেত্রবিশেষে চিকিৎসকের পরামর্শে মুখে অ্যান্টিবায়োটিক জাতীয় ওষুধ সেবনেরও প্রয়োজন হতে পারে।
মন্তব্য করুন