জুমার দিনের তাৎপর্য ও বিধি-বিধান
প্রবন্ধটি পড়া হলে শেয়ার করতে ভুলবেন না
শুরু করছি মহান আল্লাহর নামে,যিনি পরম করুনাময় অসীম দয়ালু।
জুমার দিনের তাৎপর্য ও বিধি-বিধান
”হে ইমানদারগণ, জুমুআর নামাযের জন্য আযান দেয়া হলে তোমরা আল্লাহর স্বরণে তাড়াতাড়ি ছুটে যাও এবং ক্রয়-বিক্রয় পরিত্যাগ কর।” (সূরা জুমুআ: ৯)
সুপ্রিয় ভাই, আমরাজানি জুমার দিনটি মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ দিনটি অনেকতাৎপর্য বহন করে। এর রয়েছে অনেক ফযীলত ও মর্যাদা। রয়েছে কিছুগুরুত্বপূর্ণ বিধি-বিধান। নিন্মে উক্ত বিষয়গুলো অতি সংক্ষেপে উপস্থাপন করাহল। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে দ্বীন সম্পর্কে জানা ও মানার তাওফীক দান করুন।আমীন।
সর্বশ্রেষ্ঠ দিন কোনটি এবং কেন? من فضائل يوم الجمعة
হযরত আবুহুরাই (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
“…সর্বশ্রেষ্ঠ দিনহল জুমার দিন। এই দিনে আদম (আঃ) কে সৃষ্টি করা হয়েছে, এই দিনে তাকেজান্নাতে প্রবেশ করান হয়েছে, এই দিনেই তাকে জান্নাত থেকে বাহির করা হয়।আর এই দিন ছাড়া অন্য কোন দিনে ক্বিয়ামত সংঘটিত হবে না।” (মুসলিম, তাহ:মিশকাত হা:নং ১৩৫৬)
জুমার সলাতের গুরুত্ত্ব।وجوب صلاة الجمعة
হযরত আবুল জা’দ জমারী (রাঃ) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন,
“অলসতা-অবহেলা করেযে ব্যক্তি তিন জুমাহ পরিহার করবে আল্লাহ তায়ালা তার ক্বলবে মহর মেরেদিবেন।” (আবুদাউদ,তিরমিযী, নাসাঈ, ইবনু মাজা, দারেমী, হা:সহীহ, মিশকাতহা:নং ১৩৭১)
জুমার দিনে দরূদ পড়ার ফজিলতঃ إكثار الصلاة على النبي
হযরত আউস বিন আউস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন
“তোমাদের দিনসমূহের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ দিন হল জুমার দিন। এই দিনে আদমকে সৃষ্টি করাহয়েছে, এই দিনে তাকে মৃত্যু দেওয়া হয়েছে, এই দিনে সিংগায় ফু দেওয়া হবেএবং মহা বিপর্যয়ও (ক্বিয়ামত) ঘটবে এই দিনেই। তাই এই দিনে তোমরা বেশিবেশি আমার উপর দরুদ পাঠ করবে;কেননা তোমাদের দরুদ আমার উপর বখশান হয় জুমারদিনে।” (আবু দাউদ,নাসাঈ,ইবনু মাজা প্রমুখের বরাতে সহীহ আত তারগীব ওয়াততারহীব,মিশকাত আলবানী হা:নং১৩৬১)
জুমার সলাতে যারা দেরী করে যায় তাদের নাম লেখা হয় না!التبكير إلى صلاة الجمعة
হযরত আবুহুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
“জুমার দিনেমসজিদের দরজায় ফেরেশতাগণ দাড়িয়ে যান; পর্যায়ক্রমে লেখতে থাকেন প্রথমেআগমন কারীদের ফজীলত। সর্বপ্রথম আগমন কারী একটি উট কুরবানী করার মত সুয়াবলাভ কেরন, পরের জন গরু,তারপরের জন দুম্বা,তারপরের জন মুরগী এবং তারপরের জনডিম কুরবানী দেওয়ার মত সাওয়াব লাভ করেন। অতপর ইমাম যখন বের হন, তখন তারাখাতা-পত্র গুটিয়ে রেখে মনযোগ দিয়ে খুৎবা শুনেন। (বুখারী আধুনিক প্রকাশনীহা:নং৮৭৬, মুসলিম,মিশকাত হা:নং১৩৮৪)
দু রাকাত তাহিয়্যাতুল মসজিদ না পড়ে মসজিদে কখনই বসা যায় না?تحية المسجد
হযরত জাবের (রাঃ) বলেন,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খুৎবা দিচ্ছিলেন এমন সময় সালীক গাতফানীনামের এক সাহাবী এসে মসজিদে বসে পড়লেন; রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম) তাকে বল্ললেন, হে সালীক দাড়াও, দুরাকাত নামায পড়,তবেসংক্ষেপে পড়। এরপর তিনি (সমেবেত জনতা সম্বধন করে) বললেন, জুমার দিনেইমামের খুৎবা চলাকালেও যখন তোমাদের কেউ আসবে তখনও যেন সে ২ রাকাত নামাযপড়ে নেয় এবং যেন তা সংক্ষেপ করে। (বুখারী-আধুনিক প্রকাশনী, হা:নং৮৭৭,৮৭৮,১০৯২, মুসলিম)
কী কাজ করলে জুমা বাতিল হয়ে যায়?الإنصات والاستماع للخطبة
হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
জুমার দিন খুৎবাচলাকালে তুমি যদি তোমার সাথিকে শুধু বল যে “চুপ কর”তাহলেও তুমি একটা বাজেকাজ করলে। (বুখারী আধুনিক প্রকা:হা:নং৮৮১,মুসলিম হা:নং৮৫১,মিশকাত আলবানীহা:নং১৩৮৫) অর্থাৎ চুপ কর-একথাও বলা যাবে না আর যে খুৎবা না শুনে অন্য কাজকরবে তার জুমাই বাতিল হয়ে যাবে। (যাদুল মায়াদ দ্র:)
মসজিদে মানুষের কাঁধ ডিঙ্গিয়ে সামনে যাওয়া কেমন? كراهية تخطي رقاب الناس
আব্দুল্লাহ বিন বুসর (রাঃ) বলেন,
একদা জুমার দিনরাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খুৎবা দিচ্ছিলেন এমন সময়মানুষের কাঁধ ডিঙ্গিয়ে একটি লোক এগিয়ে এলো। রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহুআলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেন, “তুমি বস, তুমি মানুষকে কষ্ট দিয়েছ।” (আবুদাউদ, নাসাঈ, ইবনু খুজাইমা, ইবনু হিব্বান,সহীহ আত্তারগীব ওয়াত্তারহীব)
মন্তব্য করুন