শীতকালে মুমিনের আমল
শীতকাল মুমিনদের জন্য বিশেষ একটি ঋতু, কারণ এতে কিছু ইবাদত সহজ হয় এবং আমলের সুযোগ বেশি থাকে। ইসলামের দৃষ্টিতে শীতকালকে “মুমিনের বসন্ত” বলা হয়। নিম্নে শীতকালে কিছু আমলের তালিকা দেওয়া হলো:
১. তাহাজ্জুদ পড়া সহজ হওয়া
শীতকালে রাত দীর্ঘ হওয়ায় তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার জন্য পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যায়। মুমিনের জন্য এটি বিশেষ সুযোগ।
হাদিস:
আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন, “রমযানের পর সর্বশ্রেষ্ঠ রোযা হল আল্লাহর মাস মুহার্রামের রোযা। আর ফরয নামাযের পর সর্বশ্রেষ্ঠ নামায হল রাতের (তাহাজ্জুদের) নামায।” (মুসলিম, সহীহ ১১৬৩নং, আবূদাঊদ, সুনান, তিরমিযী, সুনান, নাসাঈ, সুনান, ইবনে খুযাইমাহ্, সহীহ)
২. রোজা রাখা সহজ
শীতকালে দিনের দৈর্ঘ্য কম হওয়ায় রোজা রাখা সহজ হয়। বিশেষত নফল রোজার জন্য এটি একটি সুবর্ণ সুযোগ।
হাদিস:
হযরত আব্দুল্লাহ বিন সালাম (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী (ﷺ) এর বাণী হতে সর্বপ্রথম যা শুনেছি তা হল, “হে মানুষ! তোমরা সালাম প্রচার কর, অন্নদান কর, জ্ঞাতি-বন্ধন অক্ষুন্ন রাখ এবং লোকেরা যখন ঘুমিয়ে থাকে তখন তোমরা নামায পড়। এতে তোমরা নিবিঘ্নে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে।” (তিরমিযী, সুনান, ইবনে মাজাহ্, সুনান,হাকেম, মুস্তাদরাক,সহিহ তারগিব ৬১০নং)
৩. উজু করা ও নামাজে মনোযোগ বৃদ্ধি
শীতকালে ঠান্ডা পানি দিয়ে উজু করা কষ্টকর, তবে এতে অনেক সওয়াব রয়েছে।
হাদিস:
“কষ্টের মধ্যেও উত্তমভাবে উজু করা পাপ ক্ষমার মাধ্যম হয়।” (মুসলিম)
৪. কুরআন তিলাওয়াত ও জিকির বৃদ্ধি
ঠান্ডা আবহাওয়ায় ঘরের ভেতরে সময় কাটানো সহজ, তাই এ সময় বেশি বেশি কুরআন তিলাওয়াত, জিকির, এবং দোয়া করা যায়।
৫. গরীব ও অসহায়দের সহায়তা
শীতকালে গরিব-দুঃখীদের জন্য শীতবস্ত্র ও খাবারের ব্যবস্থা করা মহান আমল। এটি দান-সদকার মাধ্যমে আত্মশুদ্ধির একটি উত্তম পন্থা।
হাদিস:
“যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য দান করে, আল্লাহ তাকে দশগুণ প্রতিদান দেন।” (বুখারি)
৬. ইস্তিগফার ও দোয়া
লম্বা রাত ও ঠান্ডা আবহাওয়ায় ইবাদতের জন্য মনোযোগ বাড়ে। বেশি বেশি ইস্তিগফার ও দোয়া করার চেষ্টা করা উচিত।
৭. পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতে আদায়
ঠান্ডার কারণে অনেকেই নামাজে গাফিলতি করেন। তাই শীতকালেও জামাতে নামাজের প্রতি যত্নশীল হওয়া জরুরি।
মন্তব্য করুন